ডাউন সিনড্রোম এর কারণ ও লক্ষণ

ডাউন সিনড্রোম একটি জিনগত অবস্থা যা বিশ্বের প্রায় ১ হাজারে ১ জন শিশুর মধ্যে দেখা যায়। এটি সাধারণত ত্রিসোমি ২১ নামক ক্রোমোসোমের অতিরিক্ত কপির ফলে ঘটে। এই অবস্থার কারণে শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডাউন সিনড্রোমের কারণ, লক্ষণ এবং এর সাথে সম্পর্কিত তথ্য বিস্তারিতভাবে জানার জন্য পড়তে থাকুন।

ডাউন সিনড্রোমের কারণ

ত্রিসোমি ২১:

ত্রিসোমি ২১

ডাউন সিনড্রোম সাধারণত ত্রিসোমি ২১ নামক জিনগত পরিবর্তনের কারণে ঘটে। একটি সাধারণ মানুষের প্রতিটি কোষে ৪৬টি ক্রোমোসোম থাকে, যার মধ্যে ২৩টি মায়ের কাছ থেকে এবং ২৩টি বাবার কাছ থেকে আসে। ডাউন সিনড্রোমে, ২১ নম্বর ক্রোমোসোমের একটি অতিরিক্ত কপি থাকে, ফলে মোট ক্রোমোসোম সংখ্যা হয় ৪৭।

মোজাইক ডাউন সিনড্রোম: ডাউন সিনড্রোমের একটি কম সাধারণ রূপ হলো মোজাইক ডাউন সিনড্রোম। এতে কিছু কোষে অতিরিক্ত ক্রোমোসোম ২১ থাকে, কিন্তু অন্যান্য কোষে থাকে না। এই রূপটি কম লক্ষণ নিয়ে আসে এবং অনেক সময় এটি কম গুরুতর হয়।

ট্রান্সলোকেশন ডাউন সিনড্রোম: এই রূপে, ২১ নম্বর ক্রোমোসোমের একটি অংশ ভিন্ন ক্রোমোসোমের সাথে সংযুক্ত থাকে। এটি ডাউন সিনড্রোমের একটি বিরল কারণ এবং অনেক সময় বংশগত হতে পারে।

ডাউন সিনড্রোমের লক্ষণ

ডাউন সিনড্রোমের লক্ষণগুলি ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ লক্ষণ নিম্নরূপ:

শারীরিক লক্ষণ:

  1. মুখ এবং মাথার বৈশিষ্ট্য: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণত ছোট মাথা ও মুখ, ফ্ল্যাট নাকের পাটা, এবং ছোট কান ও মুখ থাকে। এছাড়া তাদের চোখের কোণে প্রায়ই চামড়ার ভাঁজ দেখা যায় এবং জিহ্বা বাহিরে থাকতে পারে।
  2. হাত এবং পা: তাদের হাত এবং পা ছোট ও চওড়া হয়। হাতের আঙুলগুলিও তুলনামূলকভাবে ছোট হতে পারে।
  3. পেশী টোন: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পেশী টোন কম হতে পারে, ফলে তাদের শরীরের নমনীয়তা কম হয় এবং শারীরিক কাজগুলো করতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।

স্বাস্থ্যগত সমস্যা:

  1. হার্টের সমস্যা: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায় অর্ধেকেই হার্টের জন্মগত ত্রুটি থাকে। এটি জীবনজুড়ে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
  2. দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণ সমস্যা: তাদের প্রায়ই দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণ সমস্যা থাকতে পারে, যা চিকিৎসার মাধ্যমে সামলানো যায়।
  3. পেটের সমস্যা: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুরা প্রায়ই পেটের সমস্যা, যেমন অন্ত্রের ত্রুটি বা হজমের সমস্যা, সম্মুখীন হতে পারে।
  4. থাইরয়েড সমস্যা: তাদের থাইরয়েড সমস্যা থাকতে পারে, যা নিয়মিত পরীক্ষা ও চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

বুদ্ধিমত্তার সমস্যা:

  1. শেখার ক্ষমতা: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শেখার ক্ষমতা কম হতে পারে এবং তাদের মানসিক বিকাশ ধীর হতে পারে।
  2. ভাষা বিকাশ: তাদের ভাষা বিকাশে সমস্যা থাকতে পারে এবং কথা বলার দক্ষতা অন্যদের তুলনায় কম হতে পারে।
  3. স্মৃতিশক্তি: তাদের স্মৃতিশক্তিও তুলনামূলকভাবে দুর্বল হতে পারে।

আচরণগত লক্ষণ:

  1. মনোযোগের সমস্যা: ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুরা মনোযোগ দিতে কষ্ট করতে পারে এবং সহজে বিভ্রান্ত হতে পারে।
  2. ধৈর্যের অভাব: তাদের ধৈর্যের অভাব থাকতে পারে এবং তারা কিছুক্ষণ এক জায়গায় স্থির থাকতে কষ্ট করতে পারে।
  3. সামাজিক বিকাশ: তাদের সামাজিক বিকাশের ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে এবং তারা অন্যদের সাথে মেলামেশা করতে কষ্ট করতে পারে।

ডাউন সিনড্রোম একটি জিনগত অবস্থা যা প্রাথমিক জীবনে চিহ্নিত করা গেলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সঠিক চিকিৎসা, শিক্ষা এবং সহায়তা দিয়ে ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সমাজে সফলভাবে অবদান রাখতে পারে।

ডাউন সিনড্রোমের ট্রিটমেন্ট

ডাউন সিনড্রোমের ট্রিটমেন্ট

ডাউন সিনড্রোমের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই, তবে বিভিন্ন ধরণের সহায়ক থেরাপি ও চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে লক্ষণগুলো সামলানো যায়। এর মধ্যে ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি। প্রাথমিক চিকিৎসা এবং সহায়তা ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুরা তাদের সম্ভাবনাগুলোকে সর্বোচ্চ মাত্রায় পূর্ণ করতে সাহায্য করে।

“INDR – Institute of Neuro Development Research, আমরা ডাউন সিনড্রোমের ট্রিট্মেন্ট দিয়ে আসছি। ট্রিট্মেন্ট পেতে – 01931405986”

আরো ও জানুন – ডাউন সিন্ড্রোম

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top