শিশুর শেখায় অক্ষমতা

আরিয়ান চলনে বলনে, আচরণে আর দশটা শিশুর মতই। কিন্তু তার বাবা মা স্কুলে ভর্তি করানোর পর দেখতে পেলেন আরিয়ান একই বয়সের অন্য শিশুদের মত তাড়াতাড়ি কিছু শিখতে পারছে না। ক্লাসে ব্লাকবোর্ড থেকে কিছু টুকে নিতে তার সমস্যা হচ্ছে। সাধারণ অংক করতে সে হিমশিম খাচ্ছে। খুব সাধারণ শব্দ বানান করে লিখতে পারছে না অথবা ভুল করছে।

তার বাবা মা ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে তারা কেবল হতাশা জনক কথা শুনতে শুনতে নিজেরাই হতাশায় ভুগছেন।
সারা পৃথিবীতে আরিয়ানের মত সমস্যায় রয়েছে অগণিত শিশু। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে আমরা শেখার অক্ষমতা (লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি) বলে থাকি।

যখন কোনো শিশু তার সম বয়সী অন্য বাচ্চাদের তুলনায় শেখার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট ভাবে অনেক পিছিয়ে থাকে তখন সে লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটিতে ভুগছে বলে আমরা ধরে নেই। তবে এই ধরনের অক্ষমতা খুব সামান্য মাত্রা থেকে শুরু করে মারাত্মক লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি পর্যন্ত যেকোনো মাত্রায় শিশুর মধ্যে উপস্থিত থাকতে পারে।

লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটিতে শিশুর নিম্নোক্ত বিষয়ে সমস্যা থাকতে পারে:
মনোযোগ দিয়ে কিছু শোনা
চিন্তা করে কথা বলা
পড়তে পারা, লেখা, বানান করা
যুক্তি দিয়ে কাজ করা বা কিছু বোঝানো
অংক করা, সূক্ষ্ম কাজ করা, ইত্যাদি

কেন হয়?
লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি কেন বাচ্চার মধ্যে আসে তার সঠিক কারণ প্রতিটি শিশুর জন্য ভিন্ন হতে পারে। কারও বংশগত ভাবে এটা আসে, আবার কারও জন্মের সময় কোনো সমস্যা যেমন সময়ের আগে জন্ম নেয়া, কম ওজনের শিশু জন্ম নেয়া, জন্মের সময় অক্সিজেন এর অভাব হলে, জন্ম নিতে দীর্ঘ সময় লাগলে শিশু পরবর্তীতে লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটিতে ভুগতে পারে।

জন্মের পরেও অপুষ্টি, মাথায় আঘাত, কঠিন কোনো অসুখ, টক্সিক মেটাল যেমন লেড এর প্রভাবে (বাতাস থেকে অথবা খাবারের সাথে) শিশুর মধ্যে লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি আসতে পারে।

সমাধান কি?
অনেক লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটিতে ভোগা শিশু সঠিক পরিচর্যা না পেয়ে লেখাপড়ায় ভাল করতে পারে না। সব সময় তার শিখতে না পারার জন্য বাবা মা, শিক্ষক, আত্মীয় পরিজন শিশুটিকেই দায়ি করেন।

এর ফলে শিশু আরও বেশি হীনমন্যতায় ভোগে। এধরনের অনেক শিশুই আর লেখাপড়া শেষ করতে পারে না। এই ধরনের শিশুর জন্য প্রয়োজন বিশেষ পদ্ধতিতে শেখানো যেটাকে উন্নত বিশ্বে এডুকেশন থেরাপি বলে (আমাদের দেশেও চালু হয়েছে)। সেই সাথে অনেক শিশুর অকুপেসনাল থেরাপি এবং সেন্সরি ইন্টিগ্রেসন থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।

উন্নত বিশ্বের মত আমাদের দেশেও এখন নিউরো-ফিডব্যাক ব্রেইন ট্রেইনিং টেকনোলজি চালু হয়েছে যার মাদ্ধমে যেসব বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাগ্রস্থ রয়েছে তাদের বিকাশ কে ত্বরান্বিত করা যায়।

তাই শিশুর এধরনের সমস্যা থাকলে তাকে ভাগ্যের হাতে ফেলে না দিয়ে তার জন্য পরিবেশ তৈরি করে দেয়া আমাদের সকলের কর্তব্য যাতে করে শিশুটির জীবন অর্থবহ হতে পারে।

২০১৬, ওসমান, নিউরো রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ, আই এন ডি আর।

০১৯৩১৪০৫৯৮৬

11 thoughts on “শিশুর শেখায় অক্ষমতা”

      1. Hello, im studying MPH. I need to submit a research report on ‘social stigma and challenges of parents of autistic children’. can u pls help me in this regard?

        1. Dear Ms Tania

          AutismBD.com is a public awareness website run by Institute of NeuroDevelopment & Research (INDR). We do perform research activities. Also we do support vast number of parents with Autistic Child. If you want, we can provide you all necessary support to perform Research if we do the research collaboratively. We do have a very experienced research team consist of researchers from BUHS; icddr,b; BSMMU. Please feel free to contact with us.

          Regards

          Dr Osman
          +88 0193 140 5986

  1. Hello Dr.

    My son is suffering from ADHD.I want to get him treated from INDR.Where & how many branches of INDR in Dhaka? May I know where to contact or appear for treatment?
    Regards.

    Ranjit.

  2. Abdullah Al Baharam / আব্দুল্লাহ্ আল বাহরয়ম

    আমার ছেলের জন্ম তারিখ ০৭/১১/২০০৬ সে এখন তৃতীয় শ্রনীতে পড়ে। আড়াই বছর বয়সে সে পড়ে গিয়ে কপালে আঘাত পায় এবং বমি করে দেয়। এম আর আই তে তার ব্রেনের কোন সমস্যা ধরা পড়েনি। সামান্য কিছু ঔষধ পথ্যে সে সুস্থ হয়ে যায়। তিন বছর বয়সে সে কথা বলা সিখে কিন্তু সে তার আগে সব কথাই বুঝতো। এরপর সাড়েতিন চার বছর বয়সে সে মুখে মুখে বেস কয়েকটি বাংলা ও ইংরেজি ছড়া সহ ৩-৪ টি সুরা, ৮ ঘর পর্যন্ত নামতা সহ বেশকিছু ইংরেজী ওয়ার্ড মিনিং খুব তড়াতাড়ি শুনে শুনে মুখস্থ করে ফেলে। লেখাপড়ার আগ্রহ ছিল বেশ ভালই। কিন্তু এখন সে পড়ালেখার কোন কিছু তেমন মনে রাখতে পারে না। লেখা পড়ার প্রতি তার আগ্রহ অনেক কম। যেমন, পড়তে বসলেই তার বিরক্ত হয়, কান্না করে, একটা বল্লে আর একটা বোঝে, রাগ হয়ে যায়, পড়তে ইচ্ছা করেনা ইত্যাদি। স্কলেও কিছু লিখতে দিলে সে সম্পূর্ণ লিখতে পারেনা। লেখায় অত্যন্ত ধীর গতি। এ ছাড়া আন্যান্য কাজে সে বেশ পারদর্শী, সাইকেল চালনা সহ সামাজিক সব ধরনের কাজে সে অনেক ভাল। ট্যাবে গেইম খেলা সহ ইন্টারনেটে সে যথেষ্ট পারদর্শী। কোন সিনেমা দেখলে সে তা সাথে সাথে রপ্ত করতে পারে এবং তা মনেও থাকে। এ অবস্থায় ছেলের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরী এবং তার পড়ালেখা মনে রাখা সহ পড়া লেখার প্রতি মনযোগ কিভাবে বাড়ানো সম্ভব ?

    1. আমার ছেলের জন্ম তারিখ ২৮/১০/২০১০ সে এখন কজ শ্রনীতে পড়ে। সেিপলপসত আক্ান্ত চকৎসাধীন । লেখাপড়ার আগ্রহ ততার ছিল বেশ ভালই। কিন্তু এখন সে পড়ালেখার কোন কিছু তেমন মনে রাখতে পারে না। লেখা পড়ার প্রতি তার আগ্রহ অনেক কম। স্কলেও কিছু লিখতে দিলে সে সম্পূর্ণ লিখতে পারেনা। লেখায় অত্যন্ত ধীর গতি।লিখতেলিখতে অন্মনস্ক হয় যায়। এ ছাড়া আন্যান্য কাজে সে বেশ পারদর্শী, সাইকেল চালনা সহ সামাজিক সব ধরনের কাজে সে অনেক ভাল। ট্যাবে গেইম খেলা সহ ইন্টারনেটে সে যথেষ্ট পারদর্শী।কাারটুন দখ অনকক এ অবস্থায় ছেলের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরী এবং তার পড়ালেখা মনে রাখা সহ পড়া লেখার প্রতি মনযোগ কিভাবে বাড়ানো সম্ভব ?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top