লেড ও মার্কারি জনিত অটিজম

leadলেড ও মার্কারি দুটি ভারি ধাতু (হেভি মেটাল) যা বাচ্চার মস্তিস্কের বিকাশের জন্য খুবি ক্ষতিকর। সাম্প্রতিক গবেষণায় প্রমানিত হয়েছে (২০১৪ সালে মিসরে) অটিজমে আক্রান্ত বাচ্চাদের বেশিরভাগই এই লেড ও মার্কারি দ্বারা আক্রান্ত। ডঃ হেবা কত্রিক পরিচালিত এই গবেষণায় অটিজমে আক্রান্ত বাচ্চাদের শরীরের লেড ও মার্কারির পরিমাণ স্বাভাবিক বাচ্চাদের সাথে তুলনা করা হয়। অটিস্টিক বাচ্চাদের শরীরে যেসব অধিক পরিমানে আছে বলে প্রমানিত হয়। সেই সাথে তিনি এটাও প্রমান করে দেখান যে ডিটক্সিফিকেসন এর মাধ্যমে উক্ত বাচ্চাদের শরীর থেকে লেড ও মার্কারির পরিমাণ কমিয়ে আনার মাধ্যমে অটিস্টিক আচরণের ব্যপক পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।

প্রশ্ন আসতে পারে অটিস্টিক বাচ্চাদের শরীরে এই লেড ও মার্কারির আধিক্য কেন? এর দুটি কারণ হতে পারে, সরাসরি মাত্রতিরিক্ত লেড ও মার্কারির সংস্পর্শে আশা এবং অন্য কারণ হল বাচ্চার শরীর থেকে ভারি ধাতু বের করে দেয়ার অক্ষমতার কারনে সেগুল জমতে থাকা। আমাদের বাসা বাড়িতে দেয়াল রং করার জন্য যে সব রং ব্যবহার করা হয় সুগুল তে মারাত্মক মাত্রায় লেড থাকে যা বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করতে পারে, আবার গাড়ির পেছন থেকেও লেড যুক্ত হাওয়া বাতাশে মেশে। আজকাল গবেষণায় দেখা যাচ্ছে মাল্টি ডোজ টিকা তে মার্কারির উপস্থিতির কারনে এর প্রতিক্রিয়ায় বাচ্চার মধ্যে অটিস্টিক আচরণ প্রকাশ পাচ্ছে।

তাহলে আরেকটি প্রশ্ন আসতে পারে, একই পরিবেশে থেকে পরিবারের অন্য বাচ্চাটির কেন অটিজম নেই? প্রতিনিয়ত আমাদের সবার শরীরেই লেড মার্কারি সহ আরও অনেক ভারি ধাতু প্রবেশ করছে। তাহলে আমাদের সবার অটিজম নেই কেন? আমাদের সকলের শরীরেই গ্লুটাথায়ন নামে একটি পদার্থ আছে যা শরীর থেকে ভারি ধাতু বের করে দিতে সহায়তা করে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, এই গ্লুটাথায়ন এর পরিমাণ কম অথবা কার্জকরি পরিমানে না থাকার দরুন অটিস্টিক বাচ্চাদের শরীর থেকে ভারি ধাতু গুল বের হয়ে যেতে পারছে না এবং তা তার স্নায়বিক বিকাশ কে বাধাগ্রস্থ করছে।

বিভিন্য প্রাকৃতিক উপায়ে ডিটক্সিফিকেসন এর মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই অটিজমে আক্রান্ত বাচ্চার শরীর থেকে ভারি ধাতু বের করে দেয়া যায়। তবে যাদের শরীরে ভারি ধাতুর মাত্রা অনেক বেশি তাদের জন্য চিলেসন থেরাপি নামে একটি বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। অনেক সময় এর ফলে বাচ্চার মধ্যে অটিস্টিক আচরণ অনেক কমে আসে এবং সে দ্রুত শিখতে থাকে।

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আমাদের দেশে বাচ্চার শরীরে লেড, মার্কারি সহ অন্যান্য ভারি ধাতুর উপস্থিতি ও এর মাত্রা কত তা পরীক্ষা করার কোন ব্যবস্থা নেই। আর তাই চিলেসন থেরাপি বাংলাদেশে করাও সম্ভব না। তাই আমাদের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেসন এর উপরেই ভরশা করতে হয়। প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেসন এর সাথে সাথে বাচ্চার শরীরে যখন ভারি ধাতুর মাত্রা কমে আসে, তার মস্তিক তখন আগের চেয়ে বেশি দ্রুত শিখতে পারে এবং অটিস্টিক আচরণের মাত্রাও কমে আসে।

জুলাই, ২০১৫, ওসমান, পোস্ট গ্রাড নিউরো রিহ্যাব (ইউ কে), প্রতিষ্ঠাতা, ইন্সিটিউট অব নিউরো-ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিসার্চ (আই এন ডি আর)
Ph: 01931405986
email: osman@OxfordBrookes.net